শেখ রাসেল পুনর্বাসন কেন্দ্রের শিশুদের শেকলে বেঁধে নির্যাতন
৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২০ মাঘ ১৪২৬, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪১
বরিশাল নগরীর রূপাতলী এলাকার শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের শিশুদের শেকলে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে সেখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে।
পুনর্বাসন কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতাধীন ওই কেন্দ্রের বালক ও বালিকা শাখায় ১৫৪ জন ছিন্নমূল শিশু রয়েছে। এর মধ্যে বালক শাখায় ৭২ জন ও বালিকা শাখায় ৮২ জন। তাদের দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছেন ১৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী।
পুনর্বাসন কেন্দ্রের কয়েকজন শিশু জানায়, এখানে তাদের দিয়ে সব ধরনের কাজ করানো হয়। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জামা-কাপড় ধুয়ে দিতে হয়। জুতা পরিষ্কার করতে হয়, হাত-পা ও মাথা ম্যাসাজ করতে হয়। এসব না করলে খাবার দেওয়া হয় না। কোনো কোনো সময় স্যাররা রাগ করলে তাদের মারধর এবং শেকল দিয়ে বেঁধে শাস্তি দেন।
স্থানীয়রা জানায়, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ঝালকাঠির একটি আদালত দুজন শিশুকে শেখ রাসেল শিশু পুনর্বাসন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পাঠান। ওই দুই শিশুকে গাছের সঙ্গে শেকলে বেঁধে রাখা হতো। তাদের মারধরও করা হয়েছে। নির্যাতনের মুখে গত ১৬ জানুয়ারি কেন্দ্র থেকে পালিয়ে যায় এক শিশু
শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের প্রকল্প উপপরিচালক বাসুদেব দেবনাথ বলেন, ‘কেন্দ্রে আমিসহ ১৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছি। এর মধ্যে কেউ যদি শিশুদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে তবে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হবে।’
নির্যাতনের মুখে শিশু পালানোর অভিযোগ প্রসঙ্গে বাসুদেব দেবনাথ বলেন, ‘পালিয়ে যাওয়া শিশুটি অনেক চঞ্চল। তাকে এখানে পাঠানো পর থেকে পালানোর চেষ্টা করছিল। নির্যাতনের কারণে সে পালিয়েছে এমন তথ্য সঠিক নয়। একটি মহল প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে এ ধরনের খবর ছড়াচ্ছে। এই প্রতিষ্ঠানের মধ্যেও এমন কেউ থাকতে পারেন।’
বরিশাল সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সদস্য সচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, ‘যেখানে শিশুদের সুরক্ষার ও যত্নের জন্য পাঠানো হয় সেখানে নির্যাতনের ঘটনা অমানবিক। কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আগে থেকেই শিশুদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ ছিল।’
এ ঘটনা থেকে কেন্দ্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থার নেতিবাচক চিত্র ফুটে ওঠে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘শিশু নির্যাতনের সঙ্গে যারাই জড়িত তদন্ত করে তাদের সবাইকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’
এই নিউজ মোট 371
বার পড়া হয়েছে