ভারত চীনের পার্থিব আগ্রাসনের মুখোমুখি হচ্ছে
২ ডিসেম্বর ২০২০, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪২৭, ১৫ জমাদিউস সানি ১৪৪২
ব্রহ্মপুত্র নদের উজানে অর্থাৎ নিজেদের অংশে বাঁধ দিতে যাচ্ছে চীন। ভারতও বসে নেই। তারা চীনের পাল্টা হিসেবে ভাটিতে নিজেদের অংশে বাঁধ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। চীনা প্রকল্পটির প্রতিক্রিয়ায় ভারতে বন্যা প্রবণতা সৃষ্টি হতে পারে কিংবা পানি সংকটে পড়তে হতে পারে, সে আশঙ্কায় আগেভাগে নিজেদের অংশে বাঁধ দেওয়ার উদ্যোগ আসতে পারে বলে জানিয়েছেন ভারতীয় কর্মকর্তারা। খবর রয়টার্সের
ব্রহ্মপুত্র নদটি চীনে ইয়ারলুং সাংবো নামেও পরিচিত। নদটি তিব্বত থেকে ভারতের অরুণাচল প্রদেশ রাজ্য এবং আসামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে প্রবাহিত হয়েছে। এ হিসেবে নদটির উজানে বাঁধ মানে ভাটির দেশ বাংলাদেশেও এর গুরুতর প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্ক। তার ওপর আবার বাংলাদেশের উজানে চীন ও ভারতে দুই বাঁধের পরিকল্পনা।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার এক ভারতীয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভারত প্রত্যন্ত পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে একটি ১০ গিগাওয়াট (জিডাব্লিউ) জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের পরিকল্পনার কথা ভাবছে। চীন ব্রহ্মপুত্র নদে নিজেদের অংশে বাঁধ নির্মাণ করতে পারে সে খবর পেলে ভাটির দেশ হিসেবে নিজেদের উদ্বেগ থেকে এ সিদ্ধান্ত আসে ভারতের। তবে ভারতের বাঁধটি মূলত বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্যই নির্মিত হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
এর আগে গত সোমবার চীনা রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম একজন সিনিয়র নির্বাহী কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানায়, ব্রহ্মপুত্র নদের একটি অংশে চীন ৬০ মেগাওয়াট সক্ষমতার একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করার কথা ভাবছে। এরও আগে চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাওয়ার কনস্ট্রাকশন করপোরেশনের চেয়ারম্যান ইয়ান ঝিয়ং একটি শিল্প সম্মেলনে বক্তব্যে বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদে বাঁধ দেওয়ার পরিকল্পনাটি একটি ঐতিহাসিক সুযোগ।
চীনা প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বর্ষা মৌসুমে পানি ছাড়ার কারণে ভারতে বন্যা দেখা দিতে পারে। আবার একটা সময় পানি সংকটও দেখা দিতে পারে। ভারতের কেন্দ্রীয় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা টিএস মেহরা বলেন, চীন উজানে বাঁধ দিচ্ছে। এটা আমাদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তাই সম্ভাব্য বিপদ মোকাবিলা করতে এবং একইসঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে আমাদেরও পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, এই সময়ে আমাদের প্রয়োজন চীনের বাঁধ প্রকল্পের বিরূপ প্রভাব হ্রাস করা। এজন্য অরুণাচল প্রদেশে একটি বড় বাঁধ তৈরি করার ভাবনা। আমাদের প্রস্তাবটি সরকারের উচ্চপর্যায়ে বিবেচনাধীন।
ভারতের প্রকল্পটি চীনা বাঁধের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় প্রচুর পানি সংগ্রহের সক্ষমতা সৃষ্টি করবে বলেও মনে করেন এ কর্মকর্তা।
রয়টার্স বলছে, ভারত ও চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক নিচের দিকে। কয়েক মাস ধরে পশ্চিমা হিমালয় সীমান্তে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে মুখোমুখি অবস্থান।
এরমধ্যে বেশ কয়েকজন বিশ্লেষক সতর্ক করেছেন, ব্রহ্মপুত্র নদে বাঁধ দেওয়া সম্ভবত অন্য একটি সীমানা সংঘাতের দিকে নিয়ে যেতে পারে। কারণ বেইজিংয়ের বাঁধ নির্মাণ কার্যক্রম ভারতীয় সীমান্তের কাছাকাছি চলে গেছে।
ভারত-চীন সম্পর্কের বিশেষজ্ঞ ব্রহ্ম চেলানি টুইটে বলেছেন, ভারত চীনের পার্থিব আগ্রাসনের মুখোমুখি হচ্ছে। হিমালয় অঞ্চলে সাম্প্রতিক আগ্রাসন এবং তার পরের খবর এমনকি এখনের পাল্টাপাল্টি বাঁধ প্রকল্প অন্তত এটাই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।
বাংলাদেশে খালেদা জিয়ার থেকে গরিব আর কেউ
এই নিউজ মোট 69
বার পড়া হয়েছে